মঙ্গলবার ২ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

নীলফামারীতে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সার খালাস বন্ধ

নবিজুল ইসলাম নবীন   |   রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪   |   প্রিন্ট

নীলফামারীতে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সার খালাস বন্ধ

নীলফামারীতে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ট্রাক থেকে সার খালাস সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা। এই পরিস্থিতিতে গুদামের সামনের (নীলফামারী-ডোমার) সড়কে শনিবার (২৯ জুন) সকাল থেকে ট্রাকের সারি দীর্ঘ হতে থাকে। এতে ট্রাকচালকদের ভোগান্তির পাশাপাশি রাস্তায় যান চলাচলে সমস্যা হয়। পরে গুদাম কর্তৃপক্ষের অনুরোধে শনিবার দুপুর দুইটা থেকে আনলোডের কাজ শুরু হয়।

শ্রমিকদের অভিযোগ, গুদামের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিবস্তা লোড ও আনলোড করার জন্য মজুরি প্রদান করা হয় তিন টাকা করে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হলেও মজুরির কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এসব বিষয়ে একাধিকবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেও কোনো ফল হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা।

শ্রমিকদের সর্দার সায়েদ আলম বলেন, ‘প্রতি বস্তা তিন টাকা দরে সারাদিন কাজ করে শ্রমিকদের মাত্র দুই থেকে তিনশ টাকা আয় হয়। এ আয়ে সংসার চলে না। আমরা বহুদিন ধরে দর বাড়ানোর জন্য তাগিদ দিয়ে আসছি। কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনছে না। বাধ্য হয়ে শনিবার সকাল থেকে সব শ্রমিক কাজ বন্ধ করে দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গুদাম কর্তৃপক্ষের অনুরোধে দুপুর দুইটার দিকে আনলোডের কাজ শুরু করি। গত শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় কাজ বন্ধ ছিল। এতে করে অনেক ট্রাক আনলোডের অপেক্ষায় রয়েছে।

এদিকে শ্রমিকদের কর্মবিরতির ফলে বিপাকে পড়েন দূর-দূরান্ত থেকে সার নিয়ে আসা ট্রাকচালকরা। যশোরের নওয়াপাড়া এবং নগরবাড়ি থেকে সার নিয়ে এসে তা খালাসের জন্য অনেকেই গত তিনদিন ধরে অপেক্ষায় রয়েছেন।

নওয়াপাড়া থেকে আসা ট্রাকচালক মো. সেলিম কাজী বলেন, ‘সার নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নীলফামারীতে এসে পৌঁছাই। শুক্রবার ছুটির কারণে কাজ করেননি লেবার। এরপর শনিবার মজুরি বৃদ্ধির দাবি করে সকাল থেকে কাজ বন্ধ রাখেন তারা। এমন সমস্যায় প্রায় তিন দিন ধরে ভেতরে ঢুকতে না পেরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি।

তিনি আরও বলেন, ‘সময়মতো খালাস না হওয়ায় প্রতিদিন হেলপারসহ দুইজন মানুষের খাওয়া খরচ হচ্ছে এক হাজার টাকার সমান। এই টাকা মালিক দেবেন না। নিজের পকেট থেকে খরচ করছি। আসার সঙ্গে সঙ্গে খালাস হলে অতিরিক্ত খরচ হতো না। এছাড়া অন্য ভাড়ার যে আয় হতো এখানে বসে থেকে সেটিও হারাচ্ছি। বসে থেকে যে টাকা খরচ করছি সেটি মহাজনের কাছে দেনা হয়ে থাকবে।’

লোডিং-আনলোডিং ঠিকাদার আনছার আলী বলেন, লেবাররা প্রতিবস্তা আনলোডিং দুই টাকা এবং লোডিং এক টাকা করে মজুরি পায়। এই মজুরিতে তারা কাজ করে আসছে। এ বিষয়ে তারা আমার সঙ্গে কখনো কোনো কথা বলেনি। শুক্রবার ছুটি থাকায় কাজ বন্ধ ছিল। শনিবার সকালে হঠাৎ করে শুনি তারা কাজ বন্ধ করেছে। আমি দূরে থাকায় ফোনে বলেছি কোনো কথা থাকলে আমরা বসে সমাধান করবো, আপনারা কাজ চালিয়ে যান। এরপর দুপুর থেকে কাজ শুরু করেছে তারা। এখন কোনো সমস্যা নেই, আনলোডের কাজ দ্রুত শেষ হবে।

এ বিষয়ে নীলফামারী বাফার গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাদেমুল ইসলাম বলেন, তারা (শ্রমিক) কাজ করেন ঠিকাদারদের অধীনে। ঠিকাদারদের বাড়ি দূরে হওয়ায় লেবার সর্দার শ্রমিকদের কাছে কিছু তথ্য গোপন রেখে ফায়দা নেয়। এজন্য লেবার, সর্দার ও শ্রমিকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধে। বিষয়টিতে কথা বলে কাজ সচল রাখা হয়েছে।

Facebook Comments Box

Posted ৩:১৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১০ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬

ই-মেইল: newsnabokantha@gmail.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com